এলিন
মাদারীপুর
*******
মাদারীপুর
এসএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হলাম। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা প্রায় আসত নিজেদের দলের সদস্য ফরম পুরন করানোর জন্য। আমার দাদুর পরিবারের সবাই বাম সংগঠনের কিংবা সমমনা দলের সমর্থক হলেও নিজেকে আমি সযত্নে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছি। আমার নানার পরিবার বিএনপি এবং আওয়ামীলীগ দুই ভাগে বিভক্ত হলেও দাদার পরিবার কমিনিষ্ট এবং আওয়ামীলীগে বিভক্ত। তবে ভোটের সময় নৌকাতে দাদার পরিবারের ভোটগুলি কাউন্ট হয়। আমি বাম কিংবা ডান কোনটাই হয়নি। সারাজীবন পুলিশ, পলিটিশিয়ান, প্লিডার (এ্যাডভোকেট), প্রিস্ট (ধর্মীয় যাজক যথা ইমাম পুরুহীত), প্রেস ম্যান (সাংবাদিক) এই পাঁচ পি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছি এখনো করি। কারণ আমার ধারনা এই ৫ পি এদেশের সর্বনাশের মূল। এরা যদি সৎ হয়ে অন্তত ৫ বছর নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করত তবে এ দেশের চেহরা চেইঞ্জ হয়ে যেত।
আমি একটি মেয়েকে ভালবাসতাম। তার ছোট মামা
ছিলেন আমাদের কলেজের ছাত্র দলের প্রেসিডেন্ট। আমার প্রেমিকার মামা এবং আমার হবু
মামা শশুর চিন্তা করে আমি উনাকে মামা বলে ডাকতাম। উনার যেমন টল ফিগার তেমনি চেহরা
তেমনি গায়ের রঙ। যে কোন মানুষ প্রথম দর্শনে প্রেমে পড়ে যাবে। মামা আবার বেশ অমায়িক
ও ছিলেন। তার আচার ব্যাবহ্রার দেখে আমি দিনকে দিন মুগ্ধ হতে থাকলাম আর রাজনীতিবিদ
দের প্রতি আমি কিছুটা নমনীয় হতে শুরু হলাম।
কলেজে ভর্তির মাস তিনেক পর একদিন কলেজ
মাঠে বসে বাল্যবন্ধু গিয়াস এর সাথে গল্প করছিলাম। এর মাঝে একটা ছাত্র সংগঠনের সভাপতি
এসে আমাকে ডাক দিয়ে বলল, “এলিন ভাই একটু আসবেন”? আমি বেশ অবাক হলাম, ওই নেতা আমার
তিন বছরের সিনিয়র, আমাকে আপনি এবং ভাই করে বলছেন তাছাড়া উনি আমার নাম জানলেন
কিভাবে?
আমি গেলাম তার কাছে। সে আমাকে বলল আপনি
আমার সাথে করে যদি আসতেন, আপনার সাথে কথা ছিল। আমি ওনাকে বললাম জাহিদ ভাই আমি
কলেজের বিশিষ্ট কেউ না, আপনি আমাকে আপনি করে বলছেন কেন? তিনি আমাকে বললেন দেখুন
আমদের পার্টিতে আমরা সবাই সবাইকে সন্মান দিয়ে কথা বলি। সে যাই হোক সে আমাকে কলেজের
একপাশে শিমুল তলায় নিয়ে গিয়ে বেশ অনুরুধ করল আমি যেন তাদের পার্টিতে যোগ দেই আমাকে
তাদের বেশ প্রয়োজন। আমি প্রশ্ন ছূড়লাম, কলেজে এত ছেলে মেয়ে থাকতে আমাকে কেন হঠাত
করে প্রয়োজন হয়ে গেল? তিনি বললেন দুটি কারনে, এক - আপনি স্কুল জীবনে বিতর্ক
প্রতিযোগিতাতে সবসময় কোন না কোন স্থান দখল করতেন এর মানে হল আপনি সুবক্তা এবং ভাল
যুক্তিবিদ। আমি এবার আরো অবাক হয়ে গেলাম এ নেতা তো দেখছি আমার পুর্নাং বায়োডাটা
সংগ্রহ করে রেখেছেন। আমি বললাম আপনি এ সব কোথা থেকে শুনেছেন। উনি বললেন, “সেটা
আপনার জানার দরকার নেই”। আমি প্রশ্ন করলাম আপনার ২য় প্রয়োজন? উত্তরে তিনি বললেন,সামনে
নবীন বরন অনুষ্ঠান। নবীনদের পক্ষ থেকে আপনি বক্তিতা করবেন। কথাগুলি বলার সময় উনি
বারবার আমার গায়ে হাত দিচ্ছিলেন যেন আমি তার বাধ্য। আমি বললাম সরি, আমার দ্বারা
সম্ভব না। তিনি হেসে বললেন, ভেবে দেখুন তবে আমি আপনাকে জোর করব না। কারন এদেশে
আমরা সৎ লোকের শাষণ চাই। আমি বললাম আমি এখন যাই, পরে কথা হবে।
ঐ দিনের পর থেকে ঐ নেতা প্রায় প্রতিদিনই
আমার সাথে দেখা করতেন। আমার খোঁজ খবর নিতেন। মাঝে মাঝে চা খাওয়ার অফার দিতেন যদিও
আমি কোন পার্টি করতাম না। আর প্রতিবারই কথা বলার সময় উনি আমার গায়ে হাত দিতেন। আমি
ভাবতাম এটা বোধহয় এমনিতে করে ছোট ভাই হিসাবে উনি করে থাকেন। কখনো কলেজে যাবার সময়
পথের মাঝে দেখা হলে জোর করে ওনার মোটর সাইক্যালে তুলে নিয়ে কলেজে পৌঁছে দিতেন।
এরই মাঝে কলেজ লাইফের প্রায় ৭ মাস কেটে
গেল। একদিন বিকেল বেলা বাসায় ফিরছিলাম। হঠাত করে দেখি উনি মোটর সাইক্যাল নিয়ে এসে
আমার সামনে দাড়ালেন। তার পিছনে তার পার্টির আরো একটা ছেলে ছিল। তাকে মোটর সাইক্যাল
থেকে নামিয়ে দিয়ে আমাকে বলল উঠেন, কোথায় যাবেন নামিয়ে দিয়ে আসি। আমি বললাম আমি
বাসায় যাচ্ছি, আজকে নয় অন্য একদিন আপনার মোটর সাইক্যালে করে আমার বাসার দিকে যাব।
উনি আমাকে বললেন আমি ও আপনাদের ঐ দিকে যাচ্ছি এবং আমাকে জোর করে ওনার মোটর
সাইক্যালে তুললেন।
এরই মাঝে কলেজ লাইফের প্রায় ৭ মাস কেটে গেল। একদিন বিকেল বেলা বাসায় ফিরছিলাম। হঠাত করে দেখি উনি মোটর সাইক্যাল নিয়ে এসে আমার সামনে দাড়ালেন। তার পিছনে তার পার্টির আরো একটা ছেলে ছিল। তাকে মোটর সাইক্যাল থেকে নামিয়ে দিয়ে আমাকে বলল উঠেন, কোথায় যাবেন নামিয়ে দিয়ে আসি। আমি বললাম আমি বাসায় যাচ্ছি, আজকে নয় অন্য একদিন আপনার মোটর সাইক্যালে করে আমার বাসার দিকে যাব। উনি আমাকে বললেন আমি ও আপনাদের ঐ দিকে যাচ্ছি এবং আমাকে জোর করে ওনার মোটর সাইক্যালে তুললেন।